দেরি হলেও ধূমপান ছাড়লে লাভ। কতটা লাভ এবং কিভাবে সেটা অবশ্যই জেনে নিন। ভালো থাকবেন আপনিও। | Social Awareness | Bidhan Saha |
ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর এটা আমরা সবাই জানি। তাই রাস্তার মোড়ে মোড়ে বা সিগারেটের প্যাকেটেও লেখা থাকে ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকারক। কিন্তু এই নেশায় যারা একবার পড়েছেন তাদের পক্ষে এই নেশা থেকে মুক্তি পাওয়াটা বেশি কষ্টকর। কিন্তু চেষ্টা তো করতেই হবে। তবে অনেকেই আছেন যারা মনে করেন যে, এতো গুলো বছর তো হয়েই গেলো, এখন আর ছেড়ে কি হবে! যা ক্ষতি হওয়ার তো হয়েই গেছে। এতো গুলো বছর যখন বেঁচে গেছি তখন আর কয়েকটা বছর সিগারেট খেয়েই বাঁচি। কিন্তু আপনি কি জানেন, বয়স আপনার যতই হোকনা কেন যদি আজ থেকেই সিগারেট খাওয়া ছাড়েন তাহলে কাল থেকেই আপনার ভালো হওয়া শুরু করবে। কিভাবে সেটাই আজকে আমরা জানবো।
• 'নেচার' পত্রিকার একটা গবেষণায় জানা গেছে যে, আজ থেকে সিগারেট ছাড়লে আগামীকাল থেকেই আপনার লাভ। এর পিছনে দুটো কারণ, এক আপনি যদি আজ থেকে বা বলা ভালো এখন থেকেই সিগারেট খাওয়া বন্ধ করে দেন তাহলে আপনি আপনার যা ক্ষতি আপনি আজ পর্যন্ত নিজের হাতে করেছেন। কাল থেকে আর আপনি আপনার ঘা'য়ে আর আঘাত করছেন না। দুই হলো, গাবেষণায় জানা গেছে যে আমাদের শরীরে কিছু ভালো কোষ আছে। যেগুলো প্রতি নিয়ত ধূমপানের ফলে বাড়তে পারে না। তাই আজ থেকে ধূমপান বন্ধ করলে ওই ভালো কোষগুলো সংখ্যায় বাড়তে থাকে আমাদের শরীরে। জানা গেছে যে, ধূমপানের ফলে যে ক্ষতিগ্রস্ত কোষ বা ক্যান্সার প্রবণ কোষগুলো তৈরী হয় সেটা যদি আমরা ধূমপান বন্ধ করতে পারি তাহলে ওই ভালো কোষ গুলো খারাপ কোষ গুলোকে সরিয়ে তার জায়গায় বেড়ে ওঠে। এই গবেষণার যিনি প্রধান পিটার ক্র্যাম্বল একটা সমীক্ষা করেন। তাতে জানা যায় যে, কয়েক হাজার মানুষ যারা ৩০-৪০ বছরে টানা ১৫ হাজার প্যাকেট সিগারেট খেয়ে ফেলেছেন। এক্ষেত্রে দেখা গেছে যে, ১০ জনের মধ্যে ৯ জন মানুষের ফুসফুসের কোষ বিভাজিত হয়ে গেছে। আর এই কোষ বিভাজনই ক্যান্সারের প্রধান কারণ। এই মানুষ গুলোর মধ্যে কিছু মানুষ যখন সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিলো, তার কয়েক বছর পরেই দেখা গেলো যে, তাদের ফুসফুসে যে অংশে কোষ বিভাজিত হয়েছিলো। সেখানে ভালো কোষগুলো গজিয়ে উঠেছে।
• ধূমপানের ফলে যে আমাদের শরীরে যে খারাপ কোষগুলো তৈরী হয়েছে ধূমপান বন্ধ করে দিলে শরীর কিছু দিনের মধ্যেই সেই খারাপ কোষগুলোকে ঝরিয়ে ফেলে দেয়। আর সেই জায়গায় বেড়ে ওঠে ভালো কোষগুলো। সব কোষ বিভাজনই যে খারাপ তা কিন্তু নয়। কিন্তু ভুল জায়গায় ভুল কোষ বিভাজিত হলে সেটা ক্যান্সারের থেকেও খারাপ বিষয় তৈরী করতে পারে।
• এতো কিছুর পরেও আপনি যদি সিগারেট খাওয়া না ছাড়েন এবং একই বাক্য বলে যান যে, এখন তো দেরি হয়ে গেছে ছেড়ে আর কি হবে! তাহলে এটা বুঝতে হবে যে, আপনি আপনার ভালো চান না আর আপনি সব কিছু জেনে বুঝেও নিজের ক্ষতি করছেন। এখন একটা প্রশ্ন হলো যে, এই ধূমপান ছাড়বেন কিভাবে? সেক্ষেত্রে এখন বাজারে অনেক ধরণের ওষুধ পাওয়া যায় যা আমাদের সিগারেটের প্রতি আসক্তি কমাতে সাহায্য করবে। চেষ্টা করুন যে বন্ধুমহলে খুব ধূম্রপান হয় তাহলে সেই বন্ধু মহলে যাওয়া বন্ধ করে দিন। এমন মানুষদের সাথে মিশুন যারা ধূমপান করেন না। আপনি যদি মনে করেন যে, এতদিন খাইনি একদিন একটা খেলে কি'ই আর হবে! কিন্তু আপনি জানেন না যে, আপনি এই কয়েকদিন সিগারেট না খেয়ে যে লাভ হয়েছিলো আপনার শরীরের সেটা আবার শূন্য হয়ে যাবে। এছাড়াও, আপনার যদি ইচ্ছে থাকে তাহলে আপনাকে সিগারেট খাওয়া থেকে মুক্তি পেতে কেউ আটকাতে পারবে না।
সচেতনতা বাড়ান এবং ছাড়িয়ে দিন সবার মধ্যে। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
এই বিষয়ে আরও বিশদে জানতে আমরাদের Bengal Fusion চ্যানেলটিকে সাবস্ক্রাইব করুন এবং নীচে দেওয়া ভিডিওর লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন।