এপিসোড- ১ সম্পূর্ণ হাঁটু প্রতিস্থাপনের প্রয়োজনীয়তা ঠিক কখন হয় ?
বর্তমানে টোটাল নী রিপ্লেস্মেন্ট বা হাঁটু প্রতিস্থাপন ভীষণ পরিচিত একটি শব্দ হয়ে উঠেছে। হাঁটুর সমস্যায় ভুক্তভোগী এখন প্রচুর মানুষ। তবে হাঁটুর সমস্যা হলে প্রথমেই ভাবেন অনেকে যে হাঁটু বোধ হয় প্রতিস্থাপন করে নেওয়াই একমাত্র উপায় যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য। কিন্তু ডক্টর অভিক রায় এক অভিনব উপায় নিয়ে এসেছেন। তিনি জানিয়েছেন প্রতিস্থাপন সবসময় একমাত্র উপায় নয়। একে এড়ানো সম্ভব। কিভাবে? তার উপায় জানিয়েছেন তিনি এই ভিডিওতে।
ডক্টর অভিক রায়ের কথায় টোটাল নি রিপ্লেসমেন্ট মানে কখনোই হাঁটুটাকে পুরো কেটে বাদ দিয়ে দেওয়া নয়। হাঁটুর যে অংশগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলিকে ঠিক করা। কখন এর প্রয়োজন হয়? প্রথম যে লক্ষণ দেখা যায় তা হল হাঁটুতে ব্যথা। অনেকক্ষণ হাঁটাচলা করলে বা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে ব্যথা হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই ব্যথা বাড়তে থাকে। এই যেমন অনেকক্ষণ বসে থাকার পর যখন ওঠা হয় বা অনেকক্ষণ শুয়ে থাকার পর এপাশ-ওপাশ করতে গেলে ব্যথা হয়। তার পরবর্তী লক্ষণ হল হাঁটু বেশি নাড়াচাড়া করলে কট মট ব্যথা বা আওয়াজ। মনে হয় হাঁটুটা আস্তে আস্তে বেঁকে যাচ্ছে বা হাঁটু ফুলে যাওয়ার মত সমস্যা। এই হলো সমস্যা সূত্রপাত। এরপর যখনই চিকিৎসকের দরবারে যাওয়া হয় তখনই টোটাল নি রিপ্লেসমেন্ট এর কথা ওঠে। এরপর আপনার মনে হতেই পারে যে কেন এই ধরনের সমস্যা হচ্ছে। কারণ আপনি আপনার স্বাস্থ্য নিয়ে যথেষ্ট সচেতন। নিয়মিত এক্সারসাইজ করেন ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খান তার পরেও কেন এই ধরনের সমস্যার সূত্রপাত। সে ক্ষেত্রে তিনি জানিয়েছেন যে কোন জয়েন্ট এমনকি হাঁটুর ক্ষেত্রেও এটাই প্রযোজ্য। দুটো হাড়ের সংযোগস্থল হল একটি জয়েন্ট। তার মধ্যে একটি ক্যাপিং থাকে। তাকে বলে কার্টিলেজ। পাশে কিছু লিগামেন্ট থাকে সেগুলি একটি ক্যাপসুল এর মধ্যে থাকে। থাকে কিছু লুব্রেকেটিং এজেন্ট। যে কারণে আমরা কম বয়সে হাঁটু নিয়ে একাধিক দৌড়ঝাপ করতে পারি। তবে বয়স হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই সমস্যা পৌঁছে যায় আর্থেরাইটিসের দিকে।
এই আর্থারাইটিস দুই ধরনের হয়। একটা বয়স জনিত, একটা ব্লাড রিলেটেড। তবে মূল যে আর্থারাইটিস আজ কথা হবে তা হল জনিত আর্থ্রাইটিস।এই বয়স জনিত আর্থারাইটিস দুই ধরনের হয় প্রাইমারি হল যেটা সাধারণত আমরা দেখতে পাই যে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হাঁটুতে বা জয়েন্টে ব্যথা। আর সেকেন্ডারি হল পুরনো কোন ক্ষত বা পুরনো কোন ব্যাথা থেকে যখন আর্থারাইটিস হয়। ইন্ডিয়াতে দেখা গেছে অধিকাংশ মেয়েদের প্রাইমারি আর্থারাইটিস অর্থাৎ বয়স জনিত কারণে আর্থ্রাইটিস এর সমস্যা বেশি হয়। কিন্তু কিভাবে এই আর্থারাইটিস? শরীরের যেকোনো জয়েন্টে রি জেনারেশন এবং ডি জেনারেশন সবসময় হয়ে চলেছে। তবে যখন বয়স কম থাকে তখন রি জেনারেশন এবং ডি জেনারেশন যেমন ছন্দেহ হয় বয়স হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রি জেনারেশন কিছুটা কমে যায়। ডি জেনারেশন বেড়ে যায়। এই হতে হতে একটা সময়তে গিয়ে রি জেনারেশন বন্ধ হয়ে যায়। তখন শুধুমাত্র ডি জেনারেশনের কারণে হাঁটুর মধ্যে যে ক্যাপসুল থাকে আস্তে আস্তে মোটা করে দেয়। শক্ত করে দেয়। হাঁটুর মধ্যে যে ফ্লুইড থাকে সেটা আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। অর্থাৎ ওয়েস্ট ম্যাটারিয়াল টা বাড়তে থাকে।। হতে শুরু করে কার্টিলেজ ড্যামেজ। যাতে এই হাঁটুর সমস্যা আরো বেড়ে যায়। এই কার্টিলেজ হল এক ধরনের প্রটেকটিভ লেয়ার। যত বয়স বাড়তে থাকে এটা আস্তে আস্তে নষ্ট হতে থাকে। এরপর আস্তে আস্তে আমাদের ওই স্থানে কিছু ক্ষতের সৃষ্টি হতে থাকে তারপর আসল সমস্যা দেখা যায় হাটুতে। তারপর আস্তে আস্তে বোন এক্সপোজড হতে শুরু করে। তারপর ধীরে ধীরে হাঁটুর একটা অংশের সঙ্গে আর একটা হাঁটুর হাড়ের ঘষা লাগা শুরু হলে সৃষ্টি হয় মারাত্মক যন্ত্রণা।