কোলন ক্যান্সার কেন হয়? কি কি লক্ষণ দেখে বুঝবেন? কিভাবে সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব জেনে নিন। | Colon Cancer | Dr. Sumanta Dey |
বিজ্ঞান যত উন্নত হয়েছে ততো মানুষের মধ্যে মৃত্যুহার অনেক কমেছে। নানা রকমের মারণ রোগের ওষুধ বিজ্ঞান আমাদের দান করেছে। বহুবছর আগেও যে রোগের নাম শুনলে মানুষ ভয়ে কুঁকড়ে যেত, আজ এই সময় দাঁড়িয়ে সেটা সম্পূর্ণ নিরাময় যোগ্য। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমন কি মারণ রোগ আছে যাদের ওষুধ তৈরী হলেও তা কিন্তু সম্পূর্ণ রূপে অনেক সময়ই নিরাময় করতে ব্যর্থ হয়। তার মধ্যে অন্যতম একটা রোগ হলো ক্যান্সার। এখন বহু মানুষ ক্যান্সারের শিকার হন এবং মারাও যান। তবে আমরা যদি একটু সতর্ক থাকি এবং এই রোগটার সমন্ধে সতর্ক হই তাহলে আমরা কিন্তু এই মারণ ক্যান্সারকেও পরাজিত করতে পারি। আমরা সবাই জানি ক্যান্সার আমাদের শরীরের নানা অংশে হতে পারে, তাদের আলাদা আলাদা লক্ষণ এবং চিকিৎসা থাকে। আমরা আজকে যে ক্যান্সার সমন্ধে জানবো তা হলো, কোলন ক্যান্সার।
• কোলন ক্যান্সার বা বৃহদান্তে ক্যান্সার অথবা পায়খানার দ্বারে ক্যান্সার। এটা একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ক্যান্সার, এতে প্রতিবছর বহু মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন এবং চিকিৎসাও করাচ্ছেন। তবে দুঃখের বিষয় হলো যে এই ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো সহজে বোঝা যায় না। এবং অনেক সময় দেখা যায় যে, এর ভুল চিকিৎসাও হচ্ছে। তাই আজকে প্রথমেই আমরা জানবো এই ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো কি কি।
• কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ:
প্রথমেই যেটা লক্ষ্য করা যায় যে, আপনার পায়খানার যে স্বাভাবিক নিয়ম সেটা শেষ একমাস বা দুমাস ধরে বদলে যাচ্ছে যেমন, আগে সকালে উঠেই পায়খানা পেত, সারাদিনে একবার হতো সেখানে দিনে দু-তিনবার পায়খানায় যাচ্ছেন এবং কখন কখন কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দেখা দিচ্ছে। পায়খানার সাথে রক্ত পড়ছে এবং নাক দিয়ে সর্দির মতো রস বেরোচ্ছে। এই রকম লক্ষণ দেখা দিলে সত্ত্বর চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন, কারণ এমন অনেকেই আছেন যারা এই রকম লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকে না দেখিয়ে নিজেরাই পায়খানা পরিষ্কারের ওষুধ কিনে খাই বা পাইলসের চিকিৎসা করাই। ফলে এমন অনেক সময় দেখা গেছে যে, পাইলসের চিকিৎসা করাতে করাতে এমন অবস্থায় সেই ক্যান্সের পৌঁছে গেছে যে, তা আর নিরাময় যোগ্য নয়। তাই এই লক্ষণগুলো কোনোটা নিয়ে যদি আপনার সন্দেহ থাকে তাহলে অবশ্যই অঙ্কলোজিস্টের পরামর্শ নিন।
• এই রোগ নির্ণয়ের কিছু সহজ পদ্ধতি আছে। যদি আপনার এই রোগ ধরা পড়ে তাহলে তা নিরাময় করা সম্ভব তবে সেটা প্রাথমিক স্তরে। আমরা জানি যে, ক্যান্সারের চারটে স্তর, প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ। প্রথম এবং দ্বিতীয় স্তরে ধরা পড়লে সেটা নিরাময় যোগ্য, তৃতীয় স্তরে ধরা পড়লে অনেক সময় সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব এবং চতুর্থ স্তরে ধরা পড়লে সম্পূর্ণ নিরাময় করা না গেলেও ক্যান্সারের ছাড়িয়ে পড়ার হারকে কমানো সম্ভব।
• চিকিৎসা পদ্ধতি:
কোলন ক্যান্সারের মূলত তিনটি চিকিৎসা পদ্ধতি। তবে প্রধান যে পদ্ধতি সেটা হলো অপারেশন। এক্ষেত্রে কোলনের যে অংশে ক্যান্সার হয়েছে সেই অংশটা কেটে বাকি অংশটা আবার জুড়ে দেওয়া হয়। তারপর ক্যামো থেরাপি চলে তবে সেটা প্রথম এবং দ্বিতীয় স্তরে দিতে হয়না যদি আপনার তৃতীয় স্তরে ধরা পড়ে সেক্ষেত্রে অপারেশনের পর ক্যামো থেরাপি করাতেই হবে। অপারেশনের আগে এবং পড়ে এই ক্যামো থেরাপি এবং রেডিও থেরাপি চলে।
• এই কোলন ক্যান্সার কাদের হতে পারে জেনে নিন। যদি আপনার পরিবারে আপনার বাবা-মা'র হয়ে থাকে তাহলে সেটা আপনার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যারা খুব বেশি বাইরের খাবার খান এবং যাদের বয়স পঞ্চাশের ওপরে তাদের এই কোলন ক্যান্সারের সম্ভাবনা থাকে। তাই আপনার বয়স যদি পঞ্চাশের ওপরে হয় তাহলে নিয়মিত ক্যান্সারের পরীক্ষা করান। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
এই বিষয়ে আরও বিশদে জানতে আমরাদের Bengal Fusion চ্যানেলটিকে সাবস্ক্রাইব করুন এবং নীচে দেওয়া ভিডিওর লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন।