কোন্নগরের প্রাচীন শকুন্তলা কালীবাড়ি
স্বপ্নাদেশে পেয়ে শুরু হয়েছিল কোন্নগরে শকুন্তলা কালী পুজো । ১৩৪ বছর ধরে আজও হয়ে আসছে সেই পুজো । শনিবার শকুন্তলা মায়ের মন্দিরে পুজো দিতে আসেন বহু মানুষ। এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে শ্রী চৈতন্যদেবের নামও।কয়েকশো বছরের প্রাচীর এই পুজোকে ঘিরে প্রচুর ভক্তের সমাগম ঘটে মন্দির চত্বরে। প্রতিবছর বাংলা বৈশাখ মাসের কৃষ্ণপক্ষের দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় শনিবার এই পুজো আয়োজন করা হয়। পুজোর দিন রাতভর চলে গঙ্গাস্নান, দন্ডিঘাটা ও জল ঢালা উৎসব। লোকশ্রুতি আছে, ১৩৪ বছর আগে তৎকালীন সময়ে কোন্নগর জনপথ কানাইপুরের সঙ্গে অবিভক্ত ছিল। ডানকুনির এক কোণে নগর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য এই নগরের নাম ছিল কনের নগর। পরবর্তীকালে নামকরণ হয় কোন্নগর।শ্রী চৈতন্যদেব প্রায় ৫৩৪ বছর আগে পানিহাটিতে এসেছিলেন রাঘব পন্ডিতের টোলে ।তখন তিনি গঙ্গাস্নান করে উল্টো দিকে জনপথ দেখতে পান। তখন তিনি প্রশ্ন করেন উহা কোন নগর এরপরেই নাকি কোন্নগরের নামকরণ হয়েছিল। এ কোথাও লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে। আবার সামাজিক মতবাদও রয়েছে তৎকালীন সময়ে কোন্নগরে পুত্র সন্তানের চেয়ে কন্যা সন্তান বেশি জন্মগ্রহণ করত তাই কনের নগর থেকে কোন্নগরের নামকরণ হয়েছে।
কয়েকশো বছর আগে কোন্নগরে তেমন মানুষের বাস ছিল না, ধূ ধূ প্রান্তরে গুটি কয়েক লোক বসবাস করতেন। বাঞ্ছারাম মিত্র লেনে থাকতেন চক্রবর্তী পরিবার। সেই পরিবারের বর্তমান বংশধর তুষার চক্রবর্তী এবং হিন্দল চক্রবর্তী তাদের পূর্বপুরুষ ইন্দ্রনাথ চক্রবর্তী পুজো করে ফেরার পথে এক রাতে তিনি দেখতে পান সাদা কাপড় পরে খোলা চুলে কোন এক রমণী রাতের অন্ধকারে হেঁটে আসছিলেন। তাঁকে অনুসরণ করে পূজারী খানিক দূর আসতেই দেখতে পান সুন্দরী রমণী এক ভাগাড়ের মধ্যে থাকা অশ্বত্থ গাছের নিচে এসে বিলীন হয়ে গেলেন। ওইদিন রাতেই ওই পূজারীকে দেবী স্বপ্নাদেশ দেন, ভাগাড়ের সেই অশ্বত্থ গাছের নিচে যেখানে শকুনের বাসা রয়েছে তার তলায় দেবীর ঘট স্থাপন করে পুজো করার জন্য। দেবীর কাছে কেউ যদি খোলা মনে কোন প্রার্থনা করেন দেবী তা পূর্ণ করবেন। সেই থেকেই শুরু হয় দেবী শকুন্তলা মাতার পুজো।
অশ্বত্থ গাছের শকুনের বাসার নিচে হোগলা পাতা তালপাতার মণ্ডপ সাজিয়ে শুরু হয় দেবীর আরাধনা। পরবর্তীকালে দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে এই পুজো। এই পুজোর অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হল ছাগ বলি। এক সময় হাজার হাজার ছাগল বলি হতো। তবে বর্তমানে সীমিত সংখ্যায় ছাগ বলি হয় দেবীর কাছে।
এ ব্যাপারে বিশদে জানতে নিজের লিংকটি ক্লিক করুন এবং আমাদের চ্যানেল Bengal Fusion News Time সাবস্ক্রাইব করুন।