শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব থাকলে কিভাবে বুঝবে? দুধ ছাড়া আর কোন কোন খাবারে ক্যালসিয়াম থাকে?
ক্যালসিয়াম আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। আর শরীরে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম না থাকে তাহলে অনেক অল্প বয়স থেকেই আমাদের দাঁত নখ হাড়ের সমস্যা দেখা দেয়। একটা সময় ছিল যখন আগে অনেক বয়স্ক মানুষদের হাড়ের সমস্যা থাকতো। তবে এখন বয়সের অনেক আগে থেকেই এই ধরনের সমস্যা গুলি দেখা দেয়। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ শরীরে ক্যালসিয়াম নেই সেগুলি কিভাবে বুঝবেন। প্রথমেই বলে রাখি চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্তু তাছাড়াও যেগুলি দেখে বুঝতে পারা যায় যে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম নেই সেগুলি হল সব সময় ঘুম ঘুম ভাব, ক্লান্ত থাকা সারাদিন, উঠতে বসতে গেলে জয়েন্টে ব্যথা, হাড়ের মধ্যে আওয়াজ হওয়া, দাঁত ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া, নখের মধ্যে অথবা ত্বকের মধ্যে সাদা সাদা ছোপ, কোন কাজে আগ্রহ না পাওয়া। সাধারণত এই সমস্যাগুলি দেখা দেয় শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম না থাকার জন্য।
এবারে বলি পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম কিভাবে পাওয়া যায়?
আমরা অনেকেই প্রচুর ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার খায় কিন্তু তারপরেও ক্যালসিয়ামের ঘাটতি ঘটতে পারে শরীরে। শিখেছে মনে হতে পারে যে পর্যাপ্ত পরিমাণ দুধ খেলেই হয়তো ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মিটে যাবে। কারণ দুধে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। এছাড়া দুগ্ধজাত তৈরি খাবার যেমন পনির, মাখন দই ইত্যাদি। হতে পারে আপনি এই প্রত্যেকটি খাবারই খাচ্ছেন অথচ তার পরেও আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি ঘটছে। এর পেছনে রয়েছে আবার বিভিন্ন কারণ। যদি আপনি নিয়মিত মদ্যপান করেন বা অতিরিক্ত স্মোকিং করেন আবার এমন কোন ওষুধ আপনাকে প্রত্যেকদিন খেতে হয় যেটা হয়তো আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটাতে পারছে না। ক্যালসিয়াম আপনি খাচ্ছেন সেটা হয়তো আপনার শরীরে পৌঁছে দিচ্ছে না এই জিনিসগুলি। আবার ধরুন আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি খাচ্ছেন। অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার খেলেও কিন্তু ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দেয়। আবার আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ দুধ খান সে ক্ষেত্রে অনেকের পেট খারাপের প্রবণতা একটা দেখা দেয়। হজমের সমস্যা হয় এছাড়া বারবার বাথরুমে যেতে হয়। তা বলে কি আপনার শরীর ক্যালসিয়ামের পরিমান থেকে বঞ্চিত হবে। একেবারেই নয় দুধ ছাড়াও বিভিন্ন খাবারে ক্যালসিয়াম থাকে।
সে ক্ষেত্রে ক্যালসিয়ামের সবথেকে ভালো আধার হলো চুন। হয়তো শুনে অবাক লাগবে কিন্তু চুন হলো ক্যালসিয়ামের আধার। কিন্তু সেটা দেওয়ালে লাগানোর চুন নয়, খাবার চুন যেটা আমরা পানে ব্যবহার করি সেটা যদি এক ফোঁটা গমের দানার মত খেয়ে নেওয়া যায় তাহলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। কিন্তু কখনোই সেটা জলের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া উচিত নয় তাহলে হবে উল্টো-বিপত্তি। আবার সাদা তিল অনেকেই নাম শুনেছেন কিন্তু এই সাদা তিল এর মধ্যেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। তবে অতিরিক্ত গরমে সাদা তিল বেশি খাওয়া উচিত নয়। সেক্ষেত্রে কয়েকটা সাদা তিল গুড়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে গুড় কিন্তু ভীষণ ভালো ম্যাগনেসিয়ামের আধার। তাই ছোট নাড়ু বানিয়ে খেলে দুটোর উপকারী পাওয়া যায়। যারা দুধ যাত খাবার খেতে পারে না তারা তফু খেতে পারে। এতেও কিন্তু রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম।
এছাড়া আমাদের প্রতিদিনের যে ড্রাই ফ্রুটস কাঠবাদাম পেস্তা বাদাম আখরোট এতেও কিন্তু রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। তবে সবার আগে খেয়াল রাখতে হবে আমাদের শরীরের ভিটামিন ডি এর পরিমাণ কতটা রয়েছে। কারণ যদি ভিটামিন ডি এর কমতি থাকে তাহলে যতই ক্যালসিয়াম খায় না কেন সেটা কাজে লাগবে না। সেক্ষেত্রে সকালের দিকের যে সূর্যের আলো সেটা অন্তত দশ থেকে পনেরো মিনিট গায়ে লাগিয়ে রাখতে হবে। তাহলে আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণ করবে। আর ভিটামিন ডি যদি পরিপূর্ণ থাকে তাহলে ক্যালসিয়াম দ্রুত কাজ করে।
এমনই বিভিন্ন ধরনের উপকারী তথ্য পেতে আমাদের চ্যানেল Bengal Fusion সাবস্ক্রাইব করুন এবং নিচের লিংকটি ক্লিক করুন।