পিপুল বা অশ্বথ্ব গাছের গুনাগুন জানেন
আমাদের এই পৃথিবীতে বহু গাছ রয়েছে কিন্তু এমন একটি গাছ রয়েছে যাকে বলা হয় ট্রি অফ লাইফ। অর্থাৎ যে গাছের মৃত্যু সহজে হয় না। যে গাছ আবার অন্য গাছকে জীবন দান করে। আমরা অনেকেই এই কথাটা শুনেছি যে পিপুল গাছ বা অশ্বথ্ব গাছের নিচে ঘুমোতে নেই। কারণ ভারতীয় সংস্কৃতিতে এই গাছের গুরুত্ব অপরিসীম। যে কারণেই তো ভারতের অন্যতম বিরাট সম্মান ভারতরত্নের আকার এই গাছের পাতার অনুযায়ী। এই গাছকে শান্তির প্রতীক হিসেবেও মানা হয়। তবে এই গাছ যেখানে সেখানে হতে দেখা যায়। নির্দিষ্ট কোন জায়গায় যে লাগাতে হবে এমন কোন ব্যাপার নেই। তাই যে কারণে এই গাছকে অনেকে আবর্জনা হিসেবেও মনে করেন। কিন্তু জানেন কি এই গাছ মানব সভ্যতার জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
এই গাছের বিজ্ঞানসম্মত নাম ফিকাস রেলিজিওসা। একটি গাছের আনুপাতিক বৃদ্ধি হয় ১০০ ফুট পর্যন্ত। আর একটি গাছের গুড়ি ১০ফুট পর্যন্ত জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। মূলত ভারতীয় জমিতে এই গাছ বেশি দেখতে পাওয়া যায়। এবং যেকোনো ধরনের মাটিতেই গড়ে ওঠে এই গাছ। তবে জানেন কি পিপুল গাছ শুধু সকালে নয় সূর্যের আলো যখন থাকে না রাতের অন্ধকারেও অক্সিজেন তৈরি করতে সক্ষম। পৃথিবীতে এমন গাছের সংখ্যা খুবই কম তাদের মধ্যেই অন্যতম এই পিপুল গাছ। অর্থাৎ পিপুল গাছ তার জীবনকালে শুধুমাত্র অক্সিজেনই সরবরাহ করে পৃথিবীতে।
পাশাপাশি একটি পিপুল গাছ বহু বছর বাঁচে। গড়ে প্রায় ৯০০ থেকে ১৫০০ বছর বাঁচে একটি অশ্বথ্ব গাছ। একই জীবনে সভ্যতা দেখতে পারে এই গাছ। পাশাপাশি এই গাছের গুড়ি বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। গাছেদের ডাক্তার বলা হয় পিপুল গাছকে। এই গাছে প্রচুর পরিমাণে এমন কিছু উপাদান থাকে যা বিভিন্ন নামিদামি ওষুধে পাওয়া যায়। এই গাছের অধিকাংশ অংশ আয়ুর্বেদিক ওষুধে ব্যবহৃত হয়। পঞ্চাশেরও বেশি অসুখ সারাতে সাহায্য করে এই গাছ।তবে বর্তমানে এই গাছের সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে। যেহেতু এই গাছ বিশাল জায়গা জুড়ে বিস্তৃত সেই কারণে জনবসতি গড়ে ওঠার কারণে এই গাছ নির্মমভাবে কেটে দিচ্ছে সাধারণ মানুষ। আর তার প্রভাব পড়ছে পৃথিবীর ওপর। আমাদের ইকোসিস্টেমকে সঠিক রাখতে সাহায্য করে এই গাছ। বিভিন্ন পোকা মাকর ,কাঠবেড়ালি এমনকি বহু পাখির বাসা এই গাছ। আর এই গাছে হওয়া ফল সেই সমস্ত জীবজন্তুর খাবার।
শুধু তাই নয় বাতাসে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন বিষাক্ত ভাইরাসকে গ্রহণ করে নেয় এই গাছ। বাতাসকে পিউরিফাই করে পিপুল গাছ। জানেন কি পিপুল গাছ আমাদের পৃথিবীর ওজনস্তর সঠিক রাতে সাহায্য করে। পৃথিবীর দিকে যাতে অধিক সূর্যরশ্মী না আসে সেটাও খেয়াল রাখে এই গাছ। এমনকি একটি পিপুল গাছ তার আশেপাশের পরিবেশকেও ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। কারণ তার মধ্যে সেই ক্ষমতা রয়েছে। তবে যত দিন যাচ্ছে আমরা এই গাছ কেটে ফেলছি নিজেদের স্বার্থে। তার বদলে পৃথিবীতে আনছি বিপদ। কমিয়ে দিচ্ছি বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ। পাশাপাশি আরো অনেক অজানা ক্ষতি করে ফেলছি নিজেদের।
এ ব্যাপারে বিশদে জানতে নিচের লিঙ্কটি ক্লিক করুন। সেই সঙ্গে Bengal Fusion News Time সাবস্ক্রাইব করুন।