মাইগ্রেনের ব্যথা কেন হয়? কাদের হয়? কিভাবে এর উপশম সম্ভব? | Migraine | Dr. Debojyoti Dutta |
মাথা ব্যথা একটা খুব সাধারণ সমস্যা আমাদের জীবনের। ঠান্ডা লেগে মাথা ব্যথা করে, চোখের সমস্যার জন্যে মাথা ব্যথা করে অথবা বেশি মানসিক চাপের জন্যেও মাথায় ব্যথা হতে পারে। এই সমস্ত মাথা ব্যথা কিছুক্ষণের মধ্যে সেরে যায় এবং এই ধরণের মাথা ব্যথা ঘন ঘন হয় না। কিন্তু আমাদের মধ্যেই এমন অনেক মানুষ আছেন যাদের মাথা ব্যথা সহজে কমে না। ওষুধ খেলেও সম্পূর্ণ উপশম হয় না। কিছু ক্ষেত্রে হয়তো ব্যথা টানা তিন দিন থেকে যাচ্ছে। এই ধরেনের মাথা ব্যথা কিন্তু মাইগ্রেনের লক্ষণ। কিন্তু এই মাইগ্রেন কেন হয় বা কাদের হয়? কিভাবে এর উপশম সম্ভব? আজকে আমরা জানবো মাইগ্রেনের ব্যথা সম্পর্কে।
• মাইগ্রেনের ব্যথা কি?
মাইগ্রেন এখন খুব পরিচিত নাম। যে সমস্ত রোগীরা মাথা ব্যথার সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে আসেন তাদের মধ্যে সিংহভাগই মাইগ্রেনের শিকার। মাইগ্রেনের ব্যথা মূলত প্রাথমিক দিকে এক দিক দিয়ে শুরু হয়। কিন্তু পরবর্তী কালে সেটা মাথার দুদিকেই হতে থাকে। এক্ষেত্রে মাথায় ব্যথা দবদব করে এবং ব্যথা মধ্যম থেকে উচ্চমাত্রায় হয়ে থাকে। মাইগ্রেনের ব্যথা কয়েক ঘন্টা থেকে তিনদিন অর্থাৎ ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত থাকে। এর সাথে অনেকেরই মাইগ্রেনের ব্যথার সঙ্গে আলোয় দেখতে অসুবিধা (Photo Phobia), তীব্র শব্দে অসুবিধা (Phono Phobia) এবং বমির প্রবণতা দেখা যায়। অনেকেই বলেন মাইগ্রেনের ব্যথার সময় অন্ধকার ঘরে, নিশ্চুপ ভাবে বসে থাকতে ভালো লাগে। এছাড়া এই ব্যথা ওষুধ খেলে আংশিক কমলেও পরের দিন ঘুমের পর সম্পূর্ণভাবে কমে। এটা হলো কমন মাইগ্রেন কিন্তু এটা ছাড়াও আরও এক থেকে দু রকমের মাইগ্রেন হয়, একটা হলো ক্লাসিক মাইগ্রেন, যেখানে মাইগ্রেনের ব্যথা হওয়ার আগে থেকেই ব্যক্তি বুঝতে পারে যে তার ব্যথা শুরু হবে। আর একটি মাইগ্রেন হলো, হেমিপ্লেজিক মাইগ্রেন। এক্ষেত্রে ব্যথা শুরু হওয়ার আগে মাথার এক দিক কাজ করা বন্ধ করে দেয়। তবে এই দুটি ধরণের মাইগ্রেন খুব কম দেখা যায়। বেশি দেখা যায় সাধারণ বা কমন মাইগ্রেন।
• মাইগ্রেনের ব্যথা কেন হয়?
মাইগ্রেনের ব্যথা বিভিন্ন কারণে শুরু হতে পারে। তবে সবার ক্ষেত্রে একই কারণ নাও হতে পারে। তবে সাধারণ কারণ গুলি হলো, বেশি রোদে ঘোরাঘুরি করা, বেশি আলোয় থাকা বা বেশি শব্দে থাকা, অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকা, কোনো একটি বিশেষ খাবার খাওয়া, ব্যায়াম থেকে, মহিলাদের ক্ষেত্রে ঋতুচক্রের সময় বা ওসিপির সময় এই ব্যথা হয়ে থাকে। ফলে আমাদের চেষ্টা করতে হবে এই কারণগুলোকে একটু কম করার অর্থাৎ যেমন রোদে বেরোলে সানগ্লাস পরে, ছাতা নিয়ে নিজেকে সুরক্ষিত করে বেরোতে হবে।
• কিভাবে এর চিকিৎসা সম্ভব?
অনেকেই ভাবেন যে, ব্যথা হলে ওষুধ খাবো। কিন্তু সেটা ঠিক নয়। মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হওয়ার আগে একধরণের ওষুধ দেওয়া হয় এবং ব্যথা শুরু হলে আরেক ধরণের ওষুধ দেওয়া হয়। তবে কিছুক্ষেত্রে মাইগ্রেনের ব্যথা যাদের ওষুধ খেয়েও কমে না। ব্যথা টানা ১০-১৫ দিন থাকছে তাদের ক্ষেত্রে ক্রোনিক মাইগ্রেনে বোটক্স ইনজেকশন দেওয়া হয়। মস্তিষ্কে এই ইনজেকশন দেওয়া হয় ব্যথা কমানোর জন্যে।
এই বিষয়ে আরও বিশদে জানতে আমরাদের Bengal Fusion চ্যানেলটিকে সাবস্ক্রাইব করুন এবং নীচে দেওয়া ভিডিওর লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন।