ক্যান্সার নামক মারণ রোগের থেকে কি কি উপায় নিজেকে রক্ষা করবেন? | Prevention of Cancer | Dr. Manas Chakrabarti |

ক্যান্সার এমন একটা মারণ রোগ যার নাম শুনলেই আমাদের মধ্যে একটা আতঙ্ক কাজ করে। এই রোগে নিরাময় করার পুরোপুরি কোনো চিকিৎসা এখনও পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। কিন্তু আমরা যদি চাই তাহলে এই রোগ হওয়ার আগেই আমরা এই রোগকে প্রতিহত করতে পারি। যাকে বলা হয় Prevention of Cancer। আজকে আমরা কথা বলবো মহিলাদের যে ধরণের ক্যান্সার হয় সেই বিষয়।

pink-ribbon-g87f450a82_1920_0.jpg

• মহিলাদের জরায়ুর মুখকে বলা হয় সার্ভেক্স। যখন মহিলারা গর্ভধারণ করে তখন সেই সার্ভেক্স বাচ্চা ধরে রাখতে সাহায্য করে। এই সার্ভেক্স নামক জায়গাটা মাত্র ১-১.৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট কিন্তু এই ক্ষুদ্র স্থানেই অনেক রকম সমস্যা তৈরী হতে পারে। এই সার্ভেক্সে অকারণে কোষের বিভাজন হতে শুরু করে আর এই কোষের বিভাজনের মাত্রা অতিরিক্ত হয়ে যায় এবং তা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে তখন মহিলাদের জরায়ুতে ক্যান্সার হয়। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বিশেষজ্ঞরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে সার্ভেক্সের ক্যান্সারের একটা প্রতিষেধক আবিষ্কার করেছেন। এই সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের সাথে হিউমান প্যাপিলমা ভাইরাসের একটা যোগসূত্র আছে। ভারতবর্ষে প্রতিঘন্টায় আমরা ৮ জন মহিলার এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

skull-g0ded2f7bd_1920_0.jpg

• এই টিকা বা প্রতিষেধক খুব অল্প বয়সী মহিলাদের দেওয়া হয়ে থাকে ১০-১২ বছরের মেয়েদের। তবে যে সমস্ত মহিলাদের বয়স বৃদ্ধি পেয়েছে তাদের জন্যে এই টিকা কার্যকরী নয়। সেক্ষেত্রে প্যাপসমিয়ার নামক একটা চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আপনি টিফিন টাইমেও চিকিৎসকের কাছে গিয়ে চিকিৎসা করে আবার ফিরে আসতে পারেন। এতে কোনো কাঁটা ছেঁড়া নেই, শুধুমাত্র একই তুলির সাহায্য নিয়ে জরায়ুর মুখের কাছে ভাসতে থাকা কোষ তুলে পরীক্ষা করে দেখা হয় যে জরায়ুর স্বাস্থ্য কিরকম আছে। এই ক্যান্সার হওয়ার আগের যে পরীক্ষাগুলো করা হয় সেগুলো ফলে আমরা সহজেই ক্যান্সারকে প্রতিরোধ করে তাকে নিরাময় করতে পারি। কিন্তু যদি এই সার্ভাক্যাল ক্যান্সারের লক্ষণ দেখা যায় অর্থাৎ অকারণ রক্তপাত হতে থাকে যদি তাহলে সেই ক্যান্সার নিরাময় করার হার অনেকটাই কমে আসে। মহিলারা যদি নিজেদের ওজন নিয়ন্ত্রণ করেন এবং চর্বিজাতীয় খাবার কম খান তার সাথে সাথে ব্যায়াম বা যোগা করেন তাহলে এই রোগ অনেকটাই প্রতিরোধ করার সম্ভব।

yoga-ga1433951a_1920_0.jpg

• মহিলাদের জরায়ুর সাথে সাথে স্তন ক্যান্সারের হারও বেশি। এক্ষেত্রে ম্যামওগ্রাফি নামক একটা পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা অগ্রিমভাবে এই ক্যান্সারের প্রবণতাকে আটকাতে পারি। তবে পরীক্ষাটা বছরে একবার করে করা উচিৎ।

• এছাড়াও পুরুষ নারী নির্বিশেষে এক ধরণের ক্যান্সার দেখা যায় যার নাম ওলোনিয়াল ক্যান্সার। এটা মূলত বয়স্ক মানুষদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। সকালের যে মল সেই মল পরীক্ষা করলে যদি তাতে কোনো গোপন রক্ত থাকে তাহলে সেটা পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করা হয়।

lab-g14f34e576_1920_0.jpg

আশা করছি বন্ধুরা আপনাদের ক্যান্সার সংক্রান্ত অনেকটাই ধারণা পরিষ্কার হয়েছে। ভয় না পেয়ে সতর্ক হোন। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। 

এই বিষয়ে  আরও বিশদে জানতে আমরাদের Bengal Fusion চ্যানেলটিকে সাবস্ক্রাইব করুন এবং নীচে দেওয়া ভিডিওর লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন।

অনুলিখন: 
Oindrila Chakraborty
ll