আপনার ব্যক্তিত্ব নিয়ে কোনো ভুল ধারণা আছে কি?| মনোবিদ কি বলছেন | Mental Health Awareness | Dr. Kedar Ranjan Banerjee |

মানুষের শরীরে যেমন বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে বা বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় ঠিক তেমনই মনের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। আমাদের ব্যক্তিত্ব নিয়ে বিভিন্ন রকম সমস্যায় আমরা ভুগতে থাকি। বাইরে থেকে হয়তো দেখে কিছু বোঝার উপায় নেই। কিন্তু ভিতরে ভিতরে মানুষটা ভেঙে যাচ্ছে আস্তে আস্তে।

woman-g152a71bf7_1920_0.jpg

• একটি মেয়ের গল্প আজকে আমরা জানবো। একটি মেয়ে আঠেরো-উনিশ বছর বয়সী। সবে কলেজে ভর্তি হয়েছে। তার বাবা-মা মনোবিদের কাছে নিয়ে যান। তারা জানান যে, তারা তাকে নিয়ে ভীষণ সমস্যায় আছেন। প্রথমত, মেয়েটির প্রচন্ড ফোনের নেশা। সেটা চিকিৎসার মাধ্যমে কয়েকদিনের মধ্যেই ঠিক করা গেছে। এছাড়া, মেয়েটি খুব স্পর্শকাতর। এই জন্যে ওর কোনো বন্ধুত্ব ১-২ বছরের বেশি স্থায়ী হয় না। ফলে মেয়েটি বারবার ভেঙে পড়ে এবং সেটা বাবা-মা'র কাছে একটা ভীষণ চিন্তার বিষয়। যে ঘটনাটা বলা হচ্ছে একটু খেয়াল করে দেখবেন এটা ভীষণ সাধারণ ঘটনা। আমাদের আশেপাশে এই বয়সী চার জন মেয়ের মধ্যে এক জন এই রকম হয়ে থাকে। এসব ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, এই ধরণের সমস্যায় ভুগতে থাকা মানুষেরা খুব নাটকীয় ভঙ্গিতে কোনো পরিস্থিকে প্রকাশ করে। যেটা যতটা বড়ো নয় সেটা ততটা বড়ো আঁকার করে তারা সবার সামনে প্রকাশ করে। যাতে সবাই তাদের অ্যাটটেনশন দেয়। এটাকে বলা হয় 'অ্যাটটেনশন সীকিং বিহেভিয়ার।' এছাড়া এরা খুব সাজতে ভালোবাসে। এই সব কটা লক্ষণকে আমরা যদি একটা ছকের মধ্যে ফেলি তাহলে এটা হলো, হিস্টিরিওলিক পার্সোনালিটি ডিসর্ডার বা মনোবিদের ভাষায় ক্লাস্টার বি পার্সোনালিটি প্যাটার্ন।  'হিস্টিরিওলিক' শব্দটা এসেছে 'হিস্টিরিয়া' থেকে। আজকের গল্প এই রকমই একটি পার্সোনালিটি ডিসর্ডার নিয়ে।

hands-g724bc4dde_1920_0.jpg

• চারজন অল্প বয়সী মেয়ে আঠেরো-উনিশ বছরের, তারা প্রত্যেকেই সম্ভ্রন্ত পরিবারের। এক দামী রেস্তোরাঁয় খেতে গেছে। গিয়ে হাসাহাসি করছে, গল্প করছে এবং তাদের মধ্যে একজন মেয়ে বেশ জোড়ে জোড়ে হাসছে। আশেপাশের লোকজন তাকিয়ে দেখছে বারবার তাকে। সে প্রয়োজনের তুলনায় একটু বেশি জোড়ে হাসছে। এই সময় একটা আরশোলা উড়ে এসেছে সেই মেয়েটির গা'য়ে পড়লো। সে রীতিমতো চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দিলো রেস্তোরাঁয়। আশেপাশের লোকজনও চেয়ার ছেড়ে উঠে তাকে দেখছে। সেই সময় আরশোলাটা আবার উড়ে পাশে আরেকটি মেয়ের গা'য়ে বসলো। সেই মেয়েটিও চেঁচামেচি শুরু করে দিলো। পুরো ঘটনাটা এক বেয়ারা দূরে দাঁড়িয়ে দেখছিলো। সে এসে আরশোলাটাকে হাত দিয়ে ধরে বাইরে ফেলে দিলো।

teenage-boy-g8a58f4e5b_1920_0.jpg

• এটা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, সেই মেয়েটি চাইছিলো যে সবাই তাকে দেখুক তাকে অ্যাটটেনশন দিক। এটা একধরণের পার্সোনালিটি ডিসর্ডার। তবে কিছু মানুষের আরশোলা, টিকটিকি ইত্যাদি জিনিসে ভয় পায়। এটা কিন্তু পার্সোনালিটি ডিসর্ডার নয়, এটা হলো স্পেসিফিক ফবিয়া। দুটোকে এক করে ফেলবেন না। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।

 

এই বিষয়ে  আরও বিশদে জানতে আমরাদের Bengal Fusion চ্যানেলটিকে সাবস্ক্রাইব করুন এবং নীচে দেওয়া ভিডিওর লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন।

অনুলিখন: 
Oindrila Chakraborty
ll