আপনি কি হঠাৎ কানে শুনতে পাচ্ছেন না? তাহলে এই বিষয়টিকে অবহেলা করবেন না। | Hearing Loss | Prof. Dr. Santanu Banerjee |
আমাদের কাছে অন্ধত্বের মত বোধিরতাও একটা প্রতিবন্ধকতা। আর এই প্রতিবন্ধকতার জন্যে আমাদের নানা জায়গায় অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। একজন অন্ধ মানুষ যেমন রাস্তা পারাপারের সময় অন্যের সাহায্য ছাড়া করতে পারে না। তেমনি একজন বোধির বা কানে কম শুনতে পাওয়া মানুষও যন্ত্র বা অন্যান্য পদ্ধতি ছাড়া মানুষের কথা বুঝতে পারেন না। আপনার যদি হঠাৎ কানে শুনতে অসুবিধা হয় তাহলে সেটাকে অবহেলা করবেন না।
• কি কি কারণে কানে শুনতে অসুবিধা হয়?
১) ছোটবেলা থেকে এমন কিছু অসুখ যেমন, ম্যালেরিয়া, ইনফ্লুয়েন্সজা, ডেঙ্গুর মত জীবাণুবাহক রোগে আক্রান্ত হলে এবং সেই রোগের কিছু ওষুধ নিয়মিত খেলে, পরবর্তী সময়ে ওই ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে কানে শুনতে অসুবিধা হয়। যেমন, ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে কুইনিন নামক প্রতিষেধকটি আমরা যদি ম্যালেরিয়ার সময় খাই, তাহলে পরবর্তী সময় কানে শুনতে গেলে অসুবিধা হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা কোনো উপায় না পেয়ে এই সমস্ত ওষুধ দিতে বাধ্য হোন। আবার যদি কাউর নিমোনিয়া হয় তাহলে তাকে সুস্থ করার জন্যে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া তাকে সুস্থ করা সম্ভব নয়, কারণ তাকে জীবাণু মুক্ত করতে হবে। এই অ্যান্টিবায়োটিকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে পরবর্তী সময় কানে শুনতে অসুবিধা হতে পারে। এছাড়া, নিমোনিয়ার ফলেও কানে শুনতে অসুবিধা হতে পারে। ফলে যদি কোনো শিশু হঠাৎ এসে বলে যে, সে কানে শুনতে পারছেনা তাহলে কিন্তু বিষয়টাকে হাল্কা ভাবে নেবেন না।
২) অনেকে নানা রকমের মত দিয়ে থাকেন যে, হোমিওপ্যাথ চিকিৎসা করার জন্যে বলে আবার অনেকে এলোপ্যাথিক চিকিৎসা করার জন্যে বলে। কিন্তু এসব না করে আগে রোগটা কি ঠিক করে জানুন। বোধিরতা তিন রকমের হয়, একটি হলো পরিবহনযনিত বোধিরতা। এক্ষেত্রে কোনো একটি কারণে শব্দের পরিবহনের অভাবে কানে শুনতে অসুবিধা হয়। দ্বিতীয় হলো, আমাদের কানে একটি স্নায়ু থাকে, যা আমাদের শুনতে সাহায্য করে। সেটার কোনো রকম সমস্যা হলে কানে শুনতে অসুবিধা হয়। আবার তৃতীয় হলো, আমাদের মস্তিষ্কে শোনার একটা কেন্দ্র থাকে। সেই কেন্দ্র কোনো কারণে ড্যামেজ হলে শুনতে অসুবিধা হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চিকিৎসা করালে অনেকেই ভালো হয়ে যায়। আবার অনেকে ভালো হয়না, তার জন্যে সে নিজে এবং তার পরিবারের গাফিলতি দায়ী। ছোটবেলায় কানে শুনতে অসুবিধা হলে, সেটা সহজে সরানো যায়। কিন্তু বড়ো বয়সের বোধিরতার পিছনে ব্রেইন টিউমারের মত কারণ থাকে। অনেকেই হিয়ারিং এড ব্যবহার করেন। তবে এই হিয়ারিং এড এখনও আমাদের দেশে তৈরী হয়না। এটির ব্যবহার অনেকটাই খরচ সাপেক্ষ। তাই যে সমস্যা নিয়মিত চিকিৎসায় নিরাময় সম্ভব হয় তাকে অবহেলায় বাড়তে দেবেন না।
• কানে শোনার মত সমস্যা নিয়ে অনেকেই রসিকতা করেন, এটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বন্ধ হওয়া উচিৎ। নিজের শরীরের খেয়াল রাখুন, যে সমস্যা কয়েকদিনে ঠিক না হলে সত্বার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
এই আরও বিশদে জানতে আমরাদের Bengal Fusion চ্যানেলটিকে সাবস্ক্রাইব করুন এবং নীচে দেওয়া ভিডিওর লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন।