অবসাদ মানেই কি সব শেষ? এর লক্ষণ গুলো বুঝে কিভাবে নিজেকে এবং অন্যকে বাঁচতে সাহায্য করবেন। | Social Awareness | Bidhan Saha |
'অবসাদ' এই শব্দটির সাথে আমরা এখন কম-বেশি সকলেই পরিচিত। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটা ঘটনা আমাদের মধ্যে এই অবসাদ বিষয়টাকে আরও একটু নাড়া দিয়ে গেছে। পুরো সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যা বা স্বাভাবিক মৃত্যুকে ঘিরে অবসাদ এবং তার নিরাময় সম্পর্কে অনেকেই অনেক মন্তব্য রেখেছেন। কিন্তু আমরা কি আদৌ অবসাদের অর্থ বুঝি! আমরা কি জানি যে, আমরাও হয়তো অবসাদের শিকার। আপনার আমার প্রিয়জনটিও হয়তো অবসাদেরই শিকার! জানি না আমরা। কারণ আমরা আজকের দুনিয়ায় এতো ব্যস্ত যে আমরা ভুলে যাই যে, আমাদের শরীরের সাথে সাথে মনেরও একটা চিকিৎসা বা ভালো থাকার খোরাক দরকার। আর এর সাথে সাথেই আরও একটি কথা উঠে আসছে যে, আসুন কথা বলুন। সত্যি কি শুধু কথা বললেই এই অবসাদ দূর হয়!
• অবসাদের লক্ষণ:
১) ভিড়ের মাঝেও আমি একা। এই জনাকীর্ণ পৃথিবী আমার কাছে জনহীন। আমি খুব একা এবং কোনো একটি বিষয়ে আমি খুব চাপের মধ্যে আছি। আমার সব সময় মনখারাপ হয়ে রয়েছে। এগুলো কিছু মানসিক অবসাদর লক্ষণ।
২) নিজের প্রতি একটা বিতৃষ্ণা চলে আসা। নিজেকে আর পছন্দ না হওয়া। খিদে কমে যাওয়া, ঘুম কমে যাওয়া। খিটখিটে হয়ে যাওয়া আর এইসব লক্ষণ গুলো মিলিয়ে শরীরে আমাদের একটা অবসাদের লক্ষণ ফুটে ওঠে।
আমরা কিন্তু এতো কিছুর পরেও সামনের মানুষটাকে বুঝতে পারিনা। একবারও ভাবি না যে সামনের মানুষটা কেন এতো খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে, কেন এতো কথায় কথায় রেগে যাচ্ছে। আমরা এই সব না ভেবে, সামনের মানুষটাকে দোষ দিই। আমরা যদি বুঝতে পারি যে, আমার প্রিয়জন বা আমি নিজেও অবসাদের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি তাহলে অবশ্যই মনোবিদের সাহায্য নিন।
অনেকেই বলছেন কথা বলুন। কিন্তু সবাই তো একই রকম ভাবে নিজের মনের কথা বলতে পারে না। আর মনের কথা বললেও সেটা কতটা গোপন থাকবে সেই বিষয় ওই মানুষটিকেও সচেতন হতে হবে। যারা অন্তরমুখী তারা আঘাত পেলেও কাঁদতে পারে না, কাউকে বলতে পারেনা। তাই তাদের জন্যে একটু ভাবুন, তাদের সাহায্য করুন যাতে তারা একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে যান।
তবে যারা উচ্চ-মধ্যবিত্ত তারা না হয় মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে যেতে পারেন। কিন্তু যারা দরিদ্র যারা সরকারি বিনামূল্যের চিকিৎসায় নিজেদের শারীরিক রোগ দূর করেন, তাদের কি হবে? তাদের অবসাদে কোন মানসিক হাসপাতাল বিনামূল্যে চিকিৎসা করবে? আমরা আসলে এখন এই মনের অসুখকে গুরুত্ব দিতে শিখিনি। এগিয়ে আসুন আপনার আমার প্রিয় মানুষটির জন্যে এগিয়ে আসুন। রাতে আকাশ থেকে রোজ তারা খসে পড়ে, কিন্তু কোনো বিখ্যাত মানুষের মৃত্যুতেই আমরা গভীরভাবে শোকপ্রকাশ করি। ভুলে যাই বা হয়তো জানিই না যে, অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মত হাজার হাজার মানুষ আমাদেরকে ঘিরে আছে। হয়তো আমরা একটা পদক্ষেপ তাকে আত্মহত্যার মত পদক্ষেপ নিতে বাধা দিতে পারে।সুস্থ থাকুন, সবাইকে সুস্থ রাখুন।
এই বিষয়ে আরও বিশদে জানতে আমরাদের Bengal Fusion চ্যানেলটিকে সাবস্ক্রাইব করুন এবং নীচে দেওয়া ভিডিওর লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন।