ঠনঠনিয়া কালী বাড়ির নামের পেছনের অজানা ইতিহাস
![](https://bengalfusion.in/sites/default/files/2023-08/main.jpg)
উত্তর কলকাতা বলতেই যেমন বনেদিয়ানার চিত্র ফুটে ওঠে ঠিক তেমনি একাধিক সিদ্ধ পিঠের কথাও জানা রয়েছে অনেকের। তেমনই এক অতিপ্রসিদ্ধ স্থান ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি। কিন্তু হঠাৎ করে এমন এক নামের পেছনে কি কারণ থাকতে পারে? সেই নিয়েও রয়েছে ইতিহাস। বর্তমানে ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি বহু মানুষের দর্শনস্থান। শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালী মাতা অধিষ্ঠান করে রয়েছেন মন্দিরে। জঙ্গল অধ্যুষিত সুতানুটি গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে ভাগীরথী। সেই নদীর পাশেই তান্ত্রিক উদয়নারায়ণ ব্রহ্মচারী তৈরি করেছিলেন এক মাটির সিদ্ধেশ্বরী কালী মূর্তি। আনুমানিক ১৭০৩ সালে তৈরি হয়েছিল সেটি। ১৮০৩ সালে সংকর ঘোষ নামের এক ব্যবসায়ী মায়ের এই মন্দির তৈরি করেছিলেন। অধিষ্ঠাতা ভৈরব পুষ্পেশ্বর শিবের জন্য গড়ে দিয়েছিলেন আটচালার ঘর। রাধারমন মিত্র অবশ্য ম্যাগ ক্যাছেন সাহেবকে উদ্ধৃত করে লিখেছেন ঠনঠনিয়ার সাবেক কালী মন্দির ১৮০৩ সালে তৈরি হয়। কিন্তু মন্দিরের গায়ের এক পাথরে ১১১০ সাল লেখা রয়েছে। অর্থাৎ এই পাথরের প্রমাণে কালী মন্দির তৈরি হয়েছে ১৭০৩ খ্রিস্টাব্দে ১৮০৩ খ্রিস্টাব্দে নয়। বর্তমানে শঙ্কর ঘোষের বংশধর এরাই এই মন্দিরের সেবাইত।প্রত্যেকদিন হাজারো দর্শনার্থী ভিড় জমান সেখানে কিন্তু এমন এক নাম কেন?
বলা হয় আজ যেখানে এই জনসমাগম অতীতে সেই মন্দির ছিল জঙ্গলের মধ্যে। আর সেই মন্দিরের ঘন্টা ধ্বনি ঠনঠন করে ভেসে আসত জঙ্গলের মধ্যে থেকে। সেই কারণেই এমন নাম এই এলাকার। আবার লোকমুখে শোনা যায় আরেক ইতিহাসের কথা। বলা হয় এই কালীমন্দিরে নাকি আগে ডাকাত দলের আনাগোনা ছিল। তারা করতেন এই মাকে। আর সেই ডাকাত দল যখন মায়ের অর্চনা করে ডাকাতির জন্য বেরিয়ে আসছেন লোকালয়ে তখন সাধারণ মানুষকে সজাগ করে দিতে মন্দিরের ঘন্টা বাজানো হতো।
বলা হয় ঠনঠনিয়া জায়গাতে নাকি আগে একসময় কামারদের বসবাস ছিল। তারা সব সময় লোহা পেটাতেন। এই লোহা পেটানো ঠনঠন আওয়াজ থেকেও ঠনঠনিয়া নাম হয়েছে এই এলাকার এমনটাও বিশ্বাস করেন অনেকে। তবে সঠিক ইতিহাস কি সেই সম্পর্কে কেউই নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেন না। তবে এই ঠনঠনিয়া কালিবাড়িতে হাজির হয়েছিলেন কিশোর গদাধর চট্টোপাধ্যায়। কিশোর বয়স এই গান শুনিয়েছিলেন এখানকার অধিষ্ঠাত্রী দেবীকে। কামারপুকুর থেকেই এসে এই মন্দিরের অদূরে জামা পুকুরে থাকতেন গদাধর। পরবর্তীকালে দক্ষিণেশ্বরে গিয়ে গদাধর থেকে শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব হয়েছেন। তারপরেও কিন্তু ঠনঠনিয়ার এই কালী মূর্তিকে দর্শন করতে আসতেন তিনি। আবার এই দেবীকে গান শুনিয়েছেন সাধক কবি রামপ্রসাদ সেন।
এই ব্যাপারে বিশদে জানতে আমাদের চ্যানেল Bengal Fusion News Time সাবস্ক্রাইব করুন এবং নিচের লিঙ্ক ক্লিক করুন।
![](https://bengalfusion.in/sites/default/files/category/bengal%20fusion_327.jpeg)