কিডনির সমস্যা দেখা দিলে প্রথমে কি ধরনের ডায়েট মেনে চলা উচিৎ! | Indrani Ghosh-Dietician

কিডনির সমস্যা থাকলেই যে আমাদের ডায়ালিসিস করতে হবে তা কিন্তু নয়। আমরা যদি প্রথম থেকেই সতর্ক থাকি এবং কিছু আগাম সুরক্ষা নিই তাহলে কিন্তু এই ডায়ালিসিসকে আমরা আটকাতে পারি।

১) প্রথমেই ডায়ালিসিস হওয়ার আগের রোগীদের ক্ষেত্রে শাক-পাতা, সব্জি রান্না করার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। লিচিং পদ্ধতিতে সব্জি শাক পাতা ধুতে হবে। এক্ষেত্রে সব্জি কেটে গরম জলে ডুবিয়ে রাখতে হয়। যার ফলে সব্জিতে তে পটাশিয়াম থাকে তা নির্গত হয়ে যায়। ডালের ক্ষেত্রেও তাই, প্রেসারকুকারে ডাল দিয়ে একটুখানি শো শো শব্দ করলেই ঢাকনা খুলে সেই ডালটা ভালো করে ছেঁকে নিতে হবে। তারপর ঔ ডালটা আবার সিদ্ধ করতে হবে। এভাবেই ডালের ক্ষেত্রেও লিচিং হবে। সাধারণত কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে ডাল খাওয়ায় একটু বাধা-নিষেধ থাকে। কারণ শরীরে তরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এছাড়া সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের মাত্রাও একটা নির্দিষ্ট স্তরে রাখতে হবে।

 

২) ফলের ক্ষেত্রে আপেল, পেয়ারা, নেস্পাতি, তরমুজ খাওয়া যেতে পারে। তবে তরমুজটা একটু এড়িয়ে চললে ভালো হয় কারণ তাতে জলের পরিমান বেশি থাকে। এই ধরণের রোগীদের ক্ষেত্রে সারাদিনে ১ লিটার, ১.৫ লিটার বা ৮০০ মি. লি. তরল খেতে বলা হয়। এক্ষেত্রে জলসহ চা, ডাল, ঝোল সব কিছুই বোঝায়।

 

৩) কম পটাশিয়াম সম্পন্ন সব্জি রোজ খান। সেগুলো হলো, প্রথম ভাগে পড়ছে পটল, মুলো, বিট, লাউ, ঝিঙে, শশা, কাঁচা আম আর মটরশুটি। দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ছে, বাঁধাকপি, ফুলকপি, বেগুন, ঢ্যাড়স, লাল কুমড়ো, টমেটো ইত্যাদি, এগুলো সপ্তাহে দু তিন দিন খান। আর যেগুলো বেশি পটাশিয়াম সম্পন্ন এবং একদম এড়িয়ে চলবেন সেগুলো হলো, ধোনে পাতা, মাশরুম, কাঁচা পেঁপে। বেশি তেলমশলা জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না। এবং মাছ মাংসের ক্ষেত্রে আপনার প্রোটিন লেভেল দেখে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খান। এক্ষেত্রে ৩০ গ্রাম বা ৪০ গ্রাম/ প্রতিদিন। তবে সেটা ডায়ালিসিস না চলাকালীন অবস্থায়।

 

৪) তবে যাদের ডায়ালিসিস চলে তাদের ক্ষেত্রে প্রোটিনের মাত্রাটা বাড়ানো হয় আবার এক্ষেত্রে ডায়ালিসিস শুরু হওয়ার ছয় ঘন্টা আগে যে সমস্ত খাবার গুলো বারণ করা হয় সেগুলো খেতে বলা হয়। কারণ সেটা ডায়ালিসিসের মাধ্যমে শরীর থেকে বেড়িয়ে যাবে। এছাড়া ডায়ালিসিস চলাকালীন কার্বোহাইড্রোট, ফসফরাসের মাত্রাটাও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং শুকনো রান্না খেতে হবে। 

 

ফলে আমরা এই ডায়েট গুলোর মাধ্যমে কিন্তু খুব সহজেই ডায়ালিসিসকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। শুধু একটু সাবধানতা ও সতর্কতা মেনে চলতে হবে।

সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। এই বিষয়ে আরও বিশদে জানতে আমরাদের Bengal Fusion চ্যানেলটিকে সাবস্ক্রাইব করুন এবং নীচে দেওয়া ভিডিওর লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন।

অনুলিখন: 
মণিদীপা গায়েন
ll