Bird Flu (H5N1) সম্পর্কে কিছু সচেতনতা এবং সাবধানতা ও কিছু সঠিক পারামর্শ জেনে রাখুন। আতঙ্কিত হবেন না। | Bidhan Saha

বর্তমানে করোনা ভাইরাসের জন্য আমরা সবাই আতঙ্কে আছি। স্বাভাবিক জীবনের যে ছন্দ তা অনেকটাই কাটতে বসেছে। ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলেও পুরোপুরি আমরা এখনও বিপদ মুক্ত হতে পারেনি। এরই মধ্যে থাবা বসালো Bird Flu, যাকে বিশেষজ্ঞরা বলেন H5N1 ভাইরাস। সাধারণত পাখিদের মধ্যে এই রোগ দেখা যায়। ভারতবর্ষে বিভিন্ন জায়গায় এই বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়ছে, যদিও পশ্চিমবঙ্গে বার্ড ফ্লু'র এখনও কোনো সংক্রমন পাওয়া যায়নি। তবুও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এর সাথে সাথেই মানুষের মধ্যে আতঙ্ক এবং আশঙ্কা দানা বেঁধেছে।

আমাদের মধ্যে সর্বদাই কিছু প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে যে, এই বার্ড ফ্লু কী? বার্ড ফ্লু হলেই কী ডিম, মুরগির মাংস খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে? আমাদের আশেপাশে গাছের ডালে যে পাখিরা এসে বসে, তাদের থেকেও কী আমাদের বার্ড ফ্লু হতে পারে? এমন কী প্রচুর মানুষ তাদের শখের বিদেশী পাখিকে উড়িয়ে দিচ্ছে খাঁচা খুলে। আসুন দেখা যাক এই সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন।

animal-g4ecb9f16d_1920_0.jpg

• বার্ড ফ্লু একটি রোগের নাম, যার ভাইরাসটির নাম হলো H5N1 ভাইরাস। এক্ষেত্রে আমরা ডিম, মুরগি মাংস এবং অন্যান্য পাখির মাংস খাওয়া বন্ধ করে দিচ্ছি। তবে ডাক্তারবাবুরা বলছেন যে, ডিম বা মাংস খেলে এই রোগ ছড়ায় না। তবে সেক্ষেত্রে সংক্রমন হতেই পারে যদি সেটা আধসিদ্ধ ডিম বা কাঁচা মাংস হয়। এই মুহূর্তে পোচ, আধকাঁচা ডিম বা ওমলেট খাওয়া উচিৎ নয়।

• এক্ষেত্রে তাদেরই বার্ড ফ্লু হওয়ার সম্ভাবনা বেশি যারা মুরগির খামারে কাজ করে বা মুরগি কেটে বিক্রি করে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই মাস্ক, গ্লাপ্স এবং প্রয়োজন পড়লে পিপি কীট ব্যবহার করুন। বার্ড ফ্লু ছড়ায় পাখির বিষ্ঠা থেকে বা মল থেকে। তবে এখনও পর্যন্ত পাখির শরীর থেকে ভাইরাস উড়ে উড়ে আমাদের চোখে, মুখে, নাকে ঢুকে যেতে পারে এমন কোনো সম্ভাবনার কথা শোনা যায়নি। তবে এক্ষেত্রে একটা জিনিস মনে রাখবেন, বার্ড ফ্লু  আক্রান্ত রোগীর যিনি সেবা করেছন তাকে সতর্ক থাকতে হবে এবং মাস্ক ও গ্লাপ্স পরে থাকতে হবে।

chicken-g75034efad_1920_0.jpg

• আমাদের মধ্যে এই বার্ড ফ্লু নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে। এই সমস্ত গুজবে কান দেবেন না। প্রয়োজনে এই সব বিষয় সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকুন। ডাক্তারেরা বলছেন যে, ডিম বা মাংস ফুটন্ত জলে (১৬০°F) রান্না করলে কোনো ভাবেই সেই তাপমাত্রায় H5N1 ভাইরাস বেঁচে থাকতে পারে না। আবার এই ভাইরাস বাতাসে ধুলিকনার মত উড়ে বেড়ায় না। যারা মুরগির খামারে কাজ করে সেখানে মুরগির বিষ্ঠা চারিদিকে ছড়িয়ে থাকে এবং তা তাদের হাতে, পায়ে, গায়ে লেগে বার্ড ফ্লু হতে পারে। ফলে আপনি যদি মুরগির খামারে কাজ করেন তাহলে সেক্ষেত্রে মাস্ক, গ্লাপ্স এবং দরকার হলে পিপি কীট ব্যবহার করুন।

• কী কী লক্ষণ দেখা যায় বার্ড ফ্লুর ক্ষেত্রে?

বার্ড ফ্লু হলে সাধারণ জ্বর, সর্দি এবং প্রচন্ড জয়েন পেইন ও বমি হতে পারে। অনেক সময় বাচ্চাদের চোখে ইনফেকশনও এই রোগের লক্ষণ।

• তবে এক্ষেত্রে আপনার থেকে এই রোগ অন্য আরেক জনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে সেটা নয়, তবে সাবধানতার জন্যে মাস্ক ব্যবহার করুন।

• তবে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে যে, আমেরিকা বহুবছর আগে এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করলেও এখন এই ভ্যাকসিন আর তৈরী করছে না আমেরিকা। কারণ তাদের দেশে বহু বছর হলো এই ভাইরাসের সংক্রমন দেখা যায় না। সুতরাং, বাজারে কিন্তু এখন খুব সহজে এই ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে না, এটাই চিন্তার বিষয়।

bird-gc208777eb_1920_0.jpg

কিন্তু আমরা মানুষরাই পারি সমস্ত পরিস্থিতির সাথে মোকাবিলা করে, আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে। আর তাই ২০২১-এর এই বার্ড ফ্লুকে আমরা কাটিয়ে উঠতে পারবো। গুজবে কান দেবেন না, আতঙ্কিত হবেন না বরং সচেতন থাকেন এবং সবাইকে সচেতন করুন ও সুস্থ থাকুন।

সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। এই বিষয়ে আরও বিশদে জানতে আমরাদের Bengal Fusion চ্যানেলটিকে সাবস্ক্রাইব করুন এবং নীচে দেওয়া ভিডিওর লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন।

অনুলিখন: 
মণিদীপা গায়েন
ll